এ অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-
• বাংলাদেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলা ও দর্শনীয় স্থানগুলোর বর্ণনা দিতে পারব।
• প্রাচীন শিল্পকলার নির্মাণশৈলীর বর্ণনা দিতে পারব।
• জীবন ও জীবিকার জন্য চারু ও কারুকলা শিক্ষার গুরুত্ব উল্লেখ করতে পারব।
• চারু ও কারুকলার ব্যবহারিকক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করতে পারব।
• কালের বিবর্তনে টিকে যাওয়া শিল্পকর্মগুলোর নাম বলতে পারব।
বাংলাদেশ নামক অঞ্চলের সবচেয়ে পুরোনো ছবি কী? ভাস্কর্য কী? স্থাপত্য ও অন্যান্য শিল্পকলা কোথায় গেলে দেখা যাবে? এমন কিছু প্রশ্নের সহজ জবাবে বলা যায় একসঙ্গে এই পুরোনো শিল্পকলার কিছু পরিচয় পাওয়া যাবে ঢাকায় অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরের সংগ্রহশালায়, রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘরে, বগুড়ার মহাস্থানগড়ে, কুমিল্লার ময়নামতি ও রাজশাহীর পাহাড়পুর জাদুঘরে। ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশের বেশিরভাগ অঞ্চল পলিমাটির অঞ্চল। নরম মাটি ও জলাভূমি। ছোট-বড় অসংখ্য নদী ও খাল দ্বারা বেষ্টিত। ঝড়বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ সব সময় যেন লেগে আছে। যারা বসবাস করত তারা বেশিরভাগই সাধারণ চাষি, মজুর ও গরিব। রাজা-বাদশাহ ও শাসকদের মহলে তখন ছবি আঁকা ও অন্যান্য শিল্পকর্মের চর্চা ছিল। একমাত্র তাঁদের মহল ও বাড়ি-ঘর ইটের দেয়াল, পাথরের খিলান শক্ত করে তৈরি হতো। সাধারণ বাড়িঘর ছিল ছনের, মাটির, বাঁশের ও খড়ের।
খ্রিষ্টের জন্মের আগে বেশ কিছুকাল এই অঞ্চল শাসন করেছে মৌর্য বংশের রাজারা। এই বংশের শক্তিশালী রাজা ছিলেন সম্রাট অশোক। খ্রিষ্টীয় চার শতক থেকে কয়েকশো বছর রাজত্ব করেন গুপ্ত বংশের রাজারা । গুপ্তযুগের বিখ্যাত রাজাদের নাম সমুদ্রগুপ্ত, কুমারগুপ্ত, বৈন্যগুপ্ত প্রমুখ। এরপর কয়েকশো বছর রাজত্ব করেন পালবংশের রাজারা। তাঁদের আমলের যেসব শক্তিশালী রাজার নাম পাওয়া যায় তাঁরা হলেন গোপাল, ধর্মপাল, দেবপাল, মহীপাল, রামপাল প্রমুখ
তারপর আসে বর্মণরা ও সেন বংশীয় রাজারা। সে-সময় গোটা বাংলাভূমি অঞ্চল দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। উত্তর
ও উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের নাম ছিল গৌড়রাজ্য। দক্ষিণ-পূর্বভাগের নাম ছিল সমতট।
১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে বখতিয়ার খিলজি রাজা লক্ষ্মণ সেনের কাছ থেকে এই বাংলা অঞ্চল ছিনিয়ে নিয়ে রাজত্ব শুরু করেন। তিনি ছিলেন জাতিতে তুর্কি। এরপর মুঘল সম্রাট আকবরের আমল পর্যন্ত কয়েকশো বছর চলে মুসলিম সুলতানদের রাজত্বকাল। সে-সময়ের নাম সুলতানি আমল। এই সময়ের উল্লেখযোগ্য সুলতান ছিলেন ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ্, শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ্, সেকান্দর শাহ্, গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ্, জামালউদ্দিন মোহাম্মদ শাহ্, আলাউদ্দিন হোসেন শাহ্, গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ শাহ্ প্রমুখ। এরপর বাংলা শাসন করেন মুঘলরা, মাঝে মাঝে কোনো স্বাধীন নৃপতি। তারপর শেষ স্বাধীন নৃপতি সিরাজ-উদ্-দৌলাকে সিংহাসনচ্যুত ও হত্যা করে ইংরেজ শাসন কায়েম হয় । দুইশত বছর ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসনের পর ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারত নামে ২টি দেশ স্বাধীন হয়। পাকিস্তানের দুই অংশ। পূর্ব-পাকিস্তান ও পশ্চিম-পাকিস্তান। ১৯৭১ সালে আমরা পশ্চিম পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে পূর্ব-পাকিস্তানকে মুক্ত করে বর্তমান বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করি ।
গত কয়েক হাজার বছর ধরে বাংলা অঞ্চল কখনো গোটা অঞ্চল কখনো ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে বিভক্ত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন রাজা ও শাসকদের দ্বারা শাসিত হয়েছে। এক অঞ্চলের সাথে অন্য অঞ্চলের রেষারেষি ও যুদ্ধবিগ্রহ সব সময় লেগেই ছিল। পরাজিত অঞ্চলে লুট করা, জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়া, ধ্বংস করে দেয়া এসব স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। তাই কোনো কোনো অঞ্চল বিরান অর্থাৎ মানবশূন্য হয়ে যেত। দীর্ঘকাল বিরান থেকে একসময় মাটিচাপা পড়ে যেত। ঝড়ঝঞ্ঝা ও ভূমিকম্পের কারণেও এরকম মাটিচাপা পড়ে যেত। বাংলাদেশে মাটির স্তূপ ও গড় অঞ্চল খনন করে এরূপ কয়েকটি জনপদের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। এগুলো হলো রাজশাহী অঞ্চলে পাহাড়পুর, কুমিল্লার ময়নামতি, বগুড়ার মহাস্থানগড়, নরসিংদী জেলার ওয়ারী বটেশ্বর এর প্রাচীন সভ্যতা এবং সর্বশেষ আবিষ্কৃত মুন্সিগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী উপজেলার নাটেশ্বর সভ্যতা ।
দীর্ঘদিন মাটিচাপা থেকে অনেক কিছুই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। পাওয়া গিয়েছে কিছু লোহা ও তামার হাতিয়ার, হাঁড়ি-পাতিল, মূর্তি, পোড়ামাটির ভগ্নপাত্র, ফলকচিত্র, পাথরের মূর্তি, পাথরের ফলকচিত্র, শিলালিপি বা পাথরে উৎকীর্ণ লেখা, ফরমান, খিলান, স্তম্ভ, পিলার, ভগ্নদশায় ভবন ও ঘরবাড়ির কাঠামো, সে-সময়ে ব্যবহৃত মুদ্রা ও অলংকার। আর এসব বস্তুই বাংলা অঞ্চলের প্রাচীন শিল্পকলা ও স্থাপত্যের কিছু নিদর্শন। ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন ও বাড়িঘরের খিলান, স্তম্ভ, দেয়াল ভিত্তি ও কাঠামো থেকে প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন বুঝে নিতে পারি। চিত্রকলা ও নরম উপাদানে তৈরি কোনো শিল্পকর্ম এতদিন মাটির নিচে ও ঝড়ঝঞ্ঝায় রক্ষা পাওয়ার কোনো উপায় নেই। রক্ষা পেয়েছে ক্ষয়ে-যাওয়া লোহা, তামা, সোনা-রুপা, পাথর ও পোড়ামাটির কিছু দ্রব্য। আগেই উল্লেখ করেছি সেগুলো সংগ্রহ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকর্মের মধ্যে শিল্পনৈপুণ্যে ও কারুকাজে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো কষ্টিপাথর বা কালো পাথরে তৈরি মূর্তি। এই বিখ্যাত মূর্তিগুলো ঢাকায় জাতীয় জাদুঘরে ও বরেন্দ্র জাদুঘরে গেলে দেখা যায়। পোড়ামাটির ফলকচিত্র, পাথরে খোদাই করা ফলক ও শিলালিপি বিখ্যাত প্রাচীন শিল্পকর্ম। মাটি খুঁড়ে যেগুলো পাওয়া গিয়েছে সেগুলো বিভিন্ন জাদুঘরে রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী সেরূপ ফলক এখনও অনেক পুরোনো ইমারতে, মসজিদের দেয়ালে, মন্দিরের দেয়ালে শোভা পাচ্ছে। এরূপ ফলকচিত্রমণ্ডিত বিখ্যাত ইমারতগুলো হলো- রাজশাহীর ছোট সোনা মসজিদ, বাঘা মসজিদ, কুসুম্বা মসজিদ, পুঠিয়ার রাজবাড়ির মন্দির, খুলনার বাগেরহাটে ষাট গম্বুজ মসজিদ, খান জাহান আলীর মসজিদ এগুলো প্রাচীন স্থাপত্যকলার নিদর্শন হিসেবেও উল্লেখযোগ্য। এরূপ আরও কিছু প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন হলো, ঢাকার বড় কাটরা, ছোট কাটরা, লালবাগের দুর্গ, বিনত বিবির মসজিদ, খান মোহাম্মদ মৃধার মসজিদ, ঢাকেশ্বরী মন্দির, তারা মসজিদ, আহসান মঞ্জিল, সাতগম্বুজ মসজিদ, নারায়ণগঞ্জের হাজিগঞ্জ দুর্গ, সোনাকান্দা দুর্গ, মুন্সীগঞ্জের ইদ্রাকপুর দুর্গ, পাবনার জোড়বাংলা মন্দির, ফরিদপুরের মথুরাপুর দেউল, জোড়বাংলা মন্দির, কিশোরগঞ্জ এর এগারো সিন্দুর
সাদী মসজিদ, শাহ্ মোহাম্মদ মসজিদ, সিলেট শাহ জালালের মাজার, শাহ পরানের মাজার, জয়ন্তীয়াপুর মেগালিথ পাথর, কুমিল্লার সতেরো রত্ন মন্দির, চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার এবং এমনি আরও কিছু ইমারত ও স্থান।
কাজ : বগুড়ার মহাস্থান গড়ে প্রাপ্ত ৫টি প্রাচীন শিল্পকর্মের নাম লেখ । |
আদিকাল থেকেই চারু ও কারুকলার উপর নির্ভর করে জীবনযাপন করে আসছে বহু মানুষ। পেশা হিসেবেই তারা শিল্পকর্মকে বেছে নিয়েছে। আমাদের লোকশিল্পীরা ও কারুকাজের শিল্পীরা তাদের তৈরি শিল্পকর্ম বিক্রি করে সেই অর্থ দিয়েই জীবনযাপনের প্রয়োজন মিটিয়ে নিচ্ছে। যেমন শখের জিনিস পোড়ামাটির পুতুল, শখের হাঁড়ি, কাঠের নকশা ও ছবিবহুল পুতুল, হাতি, ঘোড়া, গ্রামের মেয়েদের নকশিকাঁথা ইত্যাদি অনেক আগে থেকেই মানুষ অর্থের বিনিময়ে সংগ্রহ করে আসছে। পাটের তৈরি শিকা, নানারকম ব্যাগও পাট দিয়ে তৈরি হচ্ছে, টেবিলম্যাটসহ বহু ব্যবহারের জিনিসপত্র যা বাণিজ্যিকভাবেও সফল। কুমারদের তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, কলসি ছাড়াও মাটি দিয়ে বর্তমানে বহু কারুশিল্প তৈরি হচ্ছে। যেমন- ছোট-বড় নানা আকৃতির ফুলদানি, মাটির ভাস্কর্য, মাটির গয়না ইত্যাদি। কাঠ, বাঁশ ও বেতের কারুশিল্প নানারকম আসবাবপত্র তৈরিতে, সংগীতচর্চার যন্ত্র তৈরিতে, ছবি ও নকশা ফুটিয়ে তোলার জন্য বহু চারু ও কারুশিল্পী কাজ করে চলেছে ।
বাংলাদেশের তাঁতের শাড়ি রং, নকশা ও ছবির জন্য দেশে-বিদেশে বিখ্যাত। জামদানির বাহারি নকশা, রঙিন সুতার বুনটের মাধ্যমে দক্ষ কারুশিল্পীরাই করে থাকেন। নকশাদার তাঁতের শাড়ির কদর শুধু দেশেই নয়, বিশ্বের বহু দেশের মানুষ আগ্রহসহকারে তা সংগ্রহ করে। যেমন- জামদানি, ঢাকাই বিটি, টাঙ্গাইল শাড়ি এবং আদিবাসীদের তাঁতে তৈরি নকশাদার রঙিন পোশাক ।
বাংলাদেশে বর্তমানে অনেকগুলো চারুকলা ও কারুশিল্প শিক্ষার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত যেমন রয়েছে তেমনি বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর প্রায় চারশতাধিক চিত্রশিল্পী উত্তীর্ণ হয়। বিভিন্ন সংস্থায় নিজেদের চারু ও কারুশিল্পের অবদান রাখতে তাঁরা সমৰ্থ হয়। যেমন বিজ্ঞাপনী সংস্থায়, বই-পুস্তকের ছবি আঁকায়, খবরের কাগজে, সিনেমাশিল্পে, টেলিভিশনের সেট নির্মাণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্পকর্মে, পোশাকশিল্পে, ওষুধশিল্প ও বিভিন্ন কলকারখানায়, ইনটেরিয়র ডিজাইনসহ বহু স্থাপনাশিল্প সুন্দর ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করে চলেছে এদেশের চারু ও কারুশিল্পীরা ।
ছবি এঁকে, প্রদর্শনী করে, ভাস্কর্যশিল্প তৈরি করেও চিত্রশিল্পীরা উপার্জন করে থাকেন। চিত্রপ্রদর্শনীতে আজকাল অনেক শিল্পীর ছবি বিক্রি হয়। বাঁশ, বেত, পাথর, মাটি ইত্যাদি মাধ্যমে নান্দনিক শিল্পকর্ম ও কারুশিল্প অনেক শিল্পবোদ্ধা ক্রয় করে সংগ্রহ করেন এবং তাঁদের ঘরবাড়ি সাজান।
তাই শুধু জীবনযাপনের প্রয়োজনেই চিত্রশিল্পীরা কাজ করছেন না, একই সঙ্গে সুন্দর ও রুচিশীল জীবনযাপনের জন্য, সংস্কৃতিসমৃদ্ধ সমাজগঠনে, সর্বোপরি দেশের উন্নতির ক্ষেত্রে চারু ও কারুশিল্পীরা বিশেষ অবদান রাখতে সমর্থ ।
কাজ : প্রাত্যহিক জীবনে চারু ও কারুকলার ব্যবহারিক ক্ষেত্র নিয়ে মাইন্ডম্যাপ তৈরি কর । |
১। লোকশিল্পীদের শিল্পকর্মের পাঁচটি উদাহরণ দাও ।
২। কারুশিল্পীদের শিল্পকর্মের পাঁচটি উদাহরণ দাও ।
৩। চারু ও কারুশিল্পীরা উপার্জন ও সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য কাজ করে চলেছেন এমন দশটি বিষয় ও সংস্থানের নাম লেখ ।
৪। বাঙলা অঞ্চলের বা বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকলার বিবরণ সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
৫। কষ্টিপাথরের মূর্তি, পোড়ামাটির ফলক ও শিলালিপি কেন প্রাচীন শিল্পকলা হিসেবে টিকে আছে? বর্তমানে এগুলো কোথায় সংরক্ষিত রয়েছে?
৬। মাটি খুঁড়ে কোন প্রাচীন জনপদ আবিষ্কৃত হয়েছে? যে কোনো ২টি জনপদ ধ্বংস হওয়ার কারণ বর্ণনা কর ।
৭। কালো পাথরের ভাস্কর্য সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ ।
৮। জাদুঘরে বা অন্য কোনো স্থানে পোড়ামাটির ফলক দেখে থাকলে তার বিবরণ দাও ।
৯। নিচে উল্লেখিত যে কোনো একটি স্থান পরিদর্শন করে থাকলে তোমার অভিজ্ঞতা বর্ণনা কর । ময়নামতি, মহাস্থানগড়, পাহাড়পুর, ষাটগম্বুজ মসজিদ, কান্তজির মন্দির, বাঘা মসজিদ, পুঠিয়ার রাজবাড়ি মন্দির, তারা মসজিদ ।
১০ । প্রাচীন শিল্পকলাগুলো কেন ঐতিহ্যবাহী সে সম্পর্কে তোমার অভিমত ব্যাখ্যা কর ।